পৃথিবী আমারই মতো একই কক্ষপথে ঘুরে ফিরে আসে দিন থেকে রাত ঘুরে দিনে। আমারও যান্ত্রিক জীবনের ধারা ঘুরে মরে একঘেয়ে পথ চিনে চিনে। অপেক্ষা নেই কোনো আশ্চর্য্য আলাদিনের মাঝে মাঝে হেঁটে আসা স্মৃতির আলিতে গলিতে। আগামীর জন্যে নেই অবশিষ্ট আশা কল্পনা শুধু কিছু অতীত জড়ো হয় রোজকার দিনলিপিতে ।
দোয়াত কলির গল্পে তোমার কথা অল্পে ফুরোয় না। হাজার দিস্তে ঝগড়াঝাটি তবু গল্পের নটে গাছটি মুড়োয় না। সাদা কালো ইচ্ছেগুলো আর রঙবাহারি পাতাগুলো কুড়োয় না। গল্পে এখন মেঘের ভার তবুও স্তিমিত উত্তাপ তার জুড়োয় না।
বুক জুড়ে অপেক্ষারা মৌন ঋষির মতো ধ্যান মগ্ন চারিপাশের কোলাহলে কিছুমাত্র বিচলিত নয় গ্রীষ্মের তপ্ত দুপুরের মতো প্রলম্বিত তবু সবকিছু তোলপাড় করে ঠিক যেন কালবৈশাখী— আসলেই কেটে যাবে মেঘ-সংশয়।
প্রতিটা দিনই নতুন হোক যেন চারার নবীন পাতা যাতে এখনো পড়েনি ধুলোর আবরণ এখনো ছোঁয়নি ধূসর মলিনতা। প্রতিটা দিনই নতুন হোক, নতুন করে শুরু হোক পথচলা পুরোনো বিবাদ, বিষাদ মুছে ফেলে হোক না আবার মৈত্রীর কথা বলা। প্রতিটা দিনই নতুন হত যদি লেখা হত অন্য উপন্যাস নতুন পাতার সজীব মায়ায় বেঁধে থাকত শুধু জীবনের উল্লাস।
নতুন পাতায় লেখা থাকে জীবনের জয়গান নতুন করে বাঁচা, ভুলে অতীত অভিমান। ঝরিয়ে দিয়ে জীর্ণতা, অঙ্কুরিত আগামী সম্ভাবনা নতুন প্রাণের অভিষেকে সজীব উন্মাদনা। রিক্ত হয়েও পর্ণমোচী দাঁড়িয়ে অপেক্ষায় আবার নতুন পাতায় আসবে ফিরে জীবনের জলসায়।
কারণ মিলিয়ে যায়, পড়ে থাকে তিক্ততা শুধু যেখানে জন্মেছিল চারা, পড়ে থাকে মরুভূমি ধূ ধূ। বিবাদ বিস্বাদ লাগে, বিষাদের রাত্রিযাপন কত আপন পর হয়ে গেছে, কত পর হয়েছে আপন। কারণ তুচ্ছ লাগে সময়ের স্রোতে একদিন, ক্ষতও হয়ত সেরে যায়, অকারণে দাগ থাকে ক্ষীণ।