আমার বাবা
প্রথম যেদিন চোখ মেলে দেখলাম এই জগতটাকে,
শিশুর চোখে ধরা দিল ঈশ্বর,তোমার রূপে।
তারপর যখন ছোটো ছোটো পায়ে হাটতে লাগলাম জীবনের পথে,
প্রতিমুহূর্ত-এর বাধা বিপদে চলেছ তুমি আমার সাথে।
ছোটবেলায় রাজা-রানির গল্প থেকে এখনকার রসায়ন বিজ্ঞান- সবের তুমি ভান্ডার
তোমায় ছাড়া আমার জীবন ভাবতেও লাগে অসাড়।
মনে পড়ে,আগে যখন কথায় কথায় ধরতাম নিত্য নতুন বায়না,
কোলে নিয়ে আপন সুরে গাইতে "আয় খুকু আয়",মনে হতো এই তো জীবন,আর তো কিছু চাইনা।
মাধ্যমিকের ফলের পর আমার জন্য প্রথম দেখেছিলাম তোমার সেই খুশি,তোমার সেই গর্ব,
আজও যখন মনের জোর হারাই,বারবার উঠে দাড়াই,মনে ভাবি "তোমার ওই হাসির জন্যই আবার লড়ব।"
যখন কোনো ভুলবশত দিয়েছি তোমায় আঘাত,করেছি তর্কাতর্কি,
বালিশে মুখ লুকিয়ে কেঁদেছে দুচোখ,বলতে তোমায় পারিনি।
যখনই আমার ভবিষ্যৎ চিন্তায় দেখেছি তোমার কপালে ভাঁজ
মনকে বুঝিয়ে এগিয়েছি নিজের পথে,করেছি নিজের কাজ।
অফিস ফেরত ক্লান্ত হয়ে যখন আসতে বাড়ি,
বিরক্ত করে বলতে আমায় "আয় তো এখানে,পড়াটা ধরি।"
এখন এসব হয়না আর,বড় হয়ে গেছি তো আমি,
কিন্তু আজও পাশে বসে আমায় রাগিয়ে বলো,"অংকটা কিন্ত তোর চেয়ে ভালো জানি।"
বলতে পারিনি কখনো তোমায় যে এইসব ছোট্ট ঘটনাগুলো আমার কাছে কতোখানি প্রিয়,
যতই বড় হয়ে যাই, তবু তোমার সঙই আমার কাছে শ্রেয়।
বিবেকানন্দ,নেতাজির আগে তুমিই আমার সবচেয়ে বড় প্রেরণা,
বাবা,তোমার এই খুকু আজও ছোট,
ভুলেও কখনো আমার হাতটা ছেড়োনা।
-